নদীর ক্ষয় কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ সমূহ, মাধ্যমিক ভূগোল,Madhymick Geography, B.A & B.Sc Geography,Landforms caused by river erosion



 



নদীর ক্ষয় কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ সমূহ

   Written By... FIROZ MALLICK



          
          
          



•নদীর ক্ষয় কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ গুলি হল:-

1.'V' আকৃতির উপত্যকা(V Shaped Valley)
2. I আকৃতির উপত্যকা(I Shaped Valley)
3. গিরিখাত (Gorge)
4.ক্যানিয়ন(Canyon)
5. শৃঙ্খলিত শৈলশিরা(Interloking Spur)
6. খরস্রোত(Rapids)
7. জলপ্রপাত(Waterfalls)
8. প্রপাত কূপ(Plung Pool)
9. মন্থকূপ(Pothole)

1. V আকৃতির উপত্যকা V Shaped Valley:-  নদী তার পার্বত্য প্রবাহের সময় অববাহিকা ও জলপ্রবাহ দ্বারা পার্শ্ব ক্ষয় ও নিম্ন ক্ষয় যখন খুব বেশি করে তখন নদী উপত্যকাটি ইংরেজি V অক্ষরের মত সৃষ্টি হয়, একেই V আকৃতির নদী উপত্যকা বলা হয়।

 উদাহরণ:- নেপালের কালি নদীর গিরিখাত।

বৈশিষ্ট্য:-i) নদীর নিম্ন ক্ষয় অপেক্ষা পার্শ্ব হয় বেশি হবার ফলে নদী উপত্যকাটি প্রশস্ত হয়ে V আকৃতির উপত্যকার সৃষ্টি হয়।
ii)প্রধানত বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে নদী উপত্যকা V আকৃতির হয়ে থাক।
iii)অনেক সময় I আকৃতির উপত্যাকায়  পার্শ্ব ধস নেমে বা পার্শ্ব ক্ষয় হয়ে V আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি হয়।



2. I আকৃতির উপত্যাকা/ I Shaped Valley :- পার্বত্য প্রবাহে ভূমির ঢাল বেশি হওয়ায় নদী প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়ে নদীর তলদেশকে তীব্রভাবে নিম্ন ক্ষয় করে এবং স্পর্শ ক্ষয় খুব কম করে ফলে উপত্যকাটি সংকীর্ণ ও গভীর হয়ে ইংরেজির I আকৃতির মতো দেখতে হয়, একেই I আকৃতির উপত্যকা বলে।

উদারহন:- গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

বৈশিষ্ট্য:- i)এই উপত্যকাটি সংকীর্ণ ও গভীর হয়।
ii) শুষ্ক পার্বত্য অঞ্চলে অধিক পরিমাণে এই উপত্যকা সৃষ্টি হয়।



3.গিরিখাত/Gorge:- বৃষ্টিবহুল উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে নদীর নিম্ন খয়ের মাত্রা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় নদী উপত্যকা অত্যন্ত সংকীর্ণ ও অতি গভীর হয়। এই ধরনের অতি গভীর ও সংকীর্ণ নদী উপত্যকা গিরিখাত বলে।

 উদাহরণ:- পেরুর কলকা নদীর গিরিখাত। হিমালয়ের নবীন ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চলে অসংখ্য গিরিখাত দেখতে পাওয়া যায়।

 বৈশিষ্ট্য:-i) গিরিখাত অত্যন্ত গভীর ও সংকীর্ণ হয়ে থাকে।
ii) গিরিখাত সৃষ্টিতে নদীর নিম্ন ক্ষয় অনেক বেশি করতে হয়।



4. ক্যানিয়ন/Canyon:- ইংরেজির Canyon শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে স্পেনীয় শব্দ Canon থেকে। যার অর্থ হলো নল। শুষ্ক পার্বত্য অঞ্চলে I আকৃতির নদী উপত্যকা অত্যন্ত গভীর ও সংকীর্ণ নলের মতো দেখতে হলে তাকে ক্যানিয়ন বলে।
 
উদাহরণ:-i) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ii)ব্ল্যাক ক্যানিয়ন ইত্যাদি.

 বৈশিষ্ট্য:-i) ক্যানিয়ন গভীর ও সংকীর্ণ হয়।
ii) শুষ্ক অঞ্চলে গঠিত গিরিখাত ও ক্যানিয়ন নামে পরিচিত।
 






5. শৃঙ্খলিত শৈলশিরা/Interloking Pool:- পার্বত্য অঞ্চলে নদীর গতিপথে বাধাস্বরূপ বিভিন্ন পাহাড় বা শৈলশিরা থাকলে সেগুলিকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য নদী এঁকে বেঁকে প্রবাহিত হতে বাধ্য হয়। এই অবস্থায় দূর থেকে দেখলে মনে হয় শৈলশিরা গুলি শৃঙ্খলিত অবস্থায় আছে। একে শৃঙ্খলিত শৈলশিরা বলা হয়।
 
 উদাহরণ:- হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে তিস্তা তোর্সা নদীর গতিপথে লক্ষ্য করা যায়।

 বৈশিষ্ট্য:- i)শৈলশিরা গুলি নদী উপত্যকায় পরস্পর যুক্ত থাকে। 
ii)নদী উপত্যকায় শৈলশিরা গুলি শৃঙ্খলিত অবস্থায় সজ্জিত থাকে।




6. খরস্রোত/Rapids:- নদীর পার্বত্য গতিপথে কোমল ও কঠিন শিলা স্তর গুলি একটির পর একটি লম্বালম্বি থাকলে নরম শিলা দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয় ধাপ যুক্ত প্রবল গতিসম্পন্ন জলস্রোতের সৃষ্টি করে একে খরস্রোত বলা হয়।

 উদাহরণ:-i) মিশরের আসমান থেকে আটবারা পর্যন্ত নীল নদের গতিপথে 6টি খরস্রোত দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও ভাগীরথী ও মন্দাকিনী নদী তে খরস্রোত দেখা যায় ।

বৈশিষ্ট্য :-i)সাধারণত জলপ্রপাতের খুব বেশি হলে খরচ স্রোতের সৃষ্টি হয়।
ii) ক্ষুদ্র ও স্বল্প দৈর্ঘ্যের জলপ্রপাতকে খরস্রোত বা রেপিড বলে।



7. জলপ্রপাত/Waterfals:- নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা স্তর একটির ওপর আরেকটি আড়াআড়িভাবে বা তীর্যকভাবে অবস্থান করলে কোমল শিলা স্তর কঠিন শিলাস্তরের তুলনায় দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয় নিচু হয়ে যায় ফলে নদীর গতিপথে খাড়া ঢাল এর সৃষ্টি হয়। এমত অবস্থায় নদীস্রোত প্রবল বেগে নিচে আছড়ে পরে একই জলপ্রপাত বলা হয় ।

বৈশিষ্ট্য:-i) জলপ্রপাত প্রধানত নদীর গতিপথে শিলাস্তরের বিন্যাস, নদীর গতিপথে আড়াআড়ি চুতি, ঝুলন্ত উপত্যকার মধ্য দিয়ে নদী প্রবাহিত হলে কিংবা মলভূমির প্রান্তভাগ দিয়ে নদী প্রবাহিত হলে তখনই সৃষ্টি হয় ।
ii)ভূমির ঢাল ও জলের পরিমাণ অনুসারে জলপ্রপাত কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
যথা:- a)কাস্কেড।  b) ক্যাটালগ।

 উদাহরণ:- ভারতের উচ্চতম জলপ্রপাত গেরসোপ্পা বা যোগ 253 মিটার উচ্চতা,এছাড়াও নায়াগ্রা, এঞ্জেল ভিক্টোরিয়া ইত্যাদি।




8.প্রপাত কূপ/Plung Pool:- জলপ্রপাতের পাদদেশ প্রবল জলস্রোত ও প্রস্তরখন্ডের প্রবল আঘাতে এবং জলে ঘূর্ণির ফলে বুদবুদ সৃষ্টির ফলে বিশাল হাঁড়ির মতো গর্তের সৃষ্টি হয় একে প্রপাত কূপ বলে।

উদাহরণ:- চেরাপুঞ্জির কাছে নোহকালিকাই জলপ্রপাতে প্রপাত কূপ দেখা যায় 

বৈশিষ্ট্য :-i)প্রপাত কূপ সৃষ্টিতে বুদবুদ ক্ষয় অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করে।
ii) প্রপাত কূপ সাধারণত জলপ্রপাতের তলদেশে তৈরি হয়।




9. মন্থকূপ/Pothole:- অবঘর্ষ ক্ষয় প্রক্রিয়ায় নদীর তলদেশে ছোট ছোট যে গোলাকার গর্তের সৃষ্টি হয় তাকে মন্থকূপ বলে।

 উদাহরণ:-ঝাড়খণ্ডের খড়কাই নদীতে অসংখ্য মন্থকূপ দেখতে পাওয়া যায়।

 বৈশিষ্ট্য :-i)সাধারণত নদীবাহিত শিলাখণ্ড পাক খেতে খেতে নদীর তলদেশে  আঘাত করে প্রথমে ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি করে। পরবর্তীকালে এই গর্ত গলির আকার বৃদ্ধি পেতে থাকে।






















Comments

Popular posts from this blog

Scale B.A B.Sc Practical HS Geography practical GEOGRAPHY PRACTICAL GRADUATION :- SCALE উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল প্র্যাক্টিক্যাল স্কেল ucchomadhymick practial Scale

GEOGRAPHY PRACTICAL :- SQUARE DIAGRAM

🏜 পৃথিবীর বৃহত্তম উষ্ণ ও শীতল মরুভূমি সমূহ🏜 মরুভূমি moruvumi Desert Sahara Gobi Kalahari thor desert