বসুন্ধরা সম্মেলন বা earth Submit 1992
Q)বসুন্ধরা সম্মেলন 1992
1992 খ্রিস্টাব্দের 3 জুন থেকে 14 জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রসংঘের তত্ত্বাবধানে ব্রাজিলের রিও-ডি-জেনিরোতে' আন্তর্জাতিক পরিবেশসংক্রান্ত বিষয়গুলি পর্যালোচনার জন্য যে সম্মেলন করেছিলেন তা 'আর্থ সামিট' বা ‘বসুন্ধরা ম্মেলন' নামে পরিচিত। এই সম্মেলনে ভারত সহ পৃথিবীর মোট 130টি দেশ অংশগ্রহণ করে
•বসুন্ধরা সম্মেলন এর প্রধান উদ্দেশ্য গুলি হল-
(i) স্বাধীনতা, সমতা, উপযুক্ত জীবনযাত্রার মান মর্যাদাসহ প্রতিটি মানুষের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে হবে।
(ii) আগামী প্রজন্মের মানুষের কথা ভেবে পরিবেশ রক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
(iii) বাতাস, জল, স্থলভাগ, উদ্ভিদ ও প্রাণীসহ সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদকে যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে রক্ষা করতে হবে।
(iv) মানুষের দায়িত্ব হল বন্যপ্রাণী ও তাদের বাসস্থান রক্ষা করা।
(v) অপুনর্নবীকরণযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত করতে হবে যাতে তা দ্রুত নিঃশেষিত না হয়।
(vi) পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক পদার্থের উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
(vit) দূষণের বিরুদ্ধে জনসাধারণের সংগ্রামকে সমর্থন করতে হবে।
(viii) দূষণ সৃষ্টিকারী রাষ্ট্রই নীতিগতভাবে দূষণ রোধের সমস্ত খরচ বহন করবে।
(ix) মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন না করে সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
(x) পরিবেশ সমস্যার সমাধানের জন্য বৈজ্ঞানিক তথ্য ও অভিজ্ঞতার বিনিময় করতে হবে।
(xi) বিভিন্ন দেশের মধ্যে দূষণ প্রতিরোধের দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক বোঝাপড়ার প্রয়োজন।
(xii) পরিবেশ সুরক্ষিত রাখার জন্য যুদ্ধ করার মনোভাব দূর করতে হবে।
••১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে ৩-১৪ জুন ব্রাজিলের রিও- ডি – জেনিরো শহরে অনুষ্ঠিত বসুন্ধরা সম্মেলনে গৃহীত করা কর্মসূচিকে এজেন্ডা ২১ বলে । এটি ২১ শতকের কর্মসূচি নামে পরিচিত । পরিবেশের সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য এই সম্মেলনে 21 টি নীতি নির্ধারণ করা হয়েছিল সেই নীতি গুলি হল:-
1)বায়ুমণ্ডলের সুরক্ষা ।
2)স্বাস্থ্য সুরক্ষার সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ ।
3)জনবসতি উন্নয়নে সুস্থায়ী বন্দোবস্ত।
4)উন্নয়নশীল দেশগুলি সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সহযোগিতা ।
5)জনসংখ্যা সম্পর্কিত সুস্থায়ী উন্নয়ন ।
6)ভূমি সম্পদের সার্বিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা।
7)ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা, মরুভূমির সম্প্রসারন ও খরা প্রতিরোধ ।
8)পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে জীব প্রযুক্তির ব্যবহার।
9)পার্বত্য এলাকায় সুস্থায়ী উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ।
10)গ্রামীণ উন্নয়ন ও স্থিতিশীল প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষির উন্নতি ।
11)সমুদ্র ও সামুদ্রিক সম্পদকে সুরক্ষা করা ।
12)জনসম্পদের উন্নয়ন।
13)মানুষের ভোগের পরিবর্তন।
14)পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে পরিকল্পনা মাফিক উন্নয়ন।
15)পরিবেশের কোন রকম ক্ষতি না করে বিষাক্ত বজ্রের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা ।
16)বিপদজনক রাসায়নিক বজ্র পদার্থের আন্তর্জাতিক পাচার বন্ধ করা ।
17)তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থের নিরাপদ ও পরিবেশের সম্মত বন্দোবস্ত করা ।
18)অরণ্যের বিলপ স্থগিত করা ।
19)জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ করা ।
20)দারিদ্র দূরীকরণ ।
21)দূষিত জল ও কঠিন বর্জ্য এর নিরাপদ ও পরিবেশ সম্মত ব্যাবস্থাপনা।
সমালোচনা:- এই বসুন্ধরা সম্মেলনের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখার জন্য যে সমস্ত নীতিগুলি নির্ধারণ করা হয়েছিল বাস্তবে তাদের প্রয়োগ ঠিকমতো হয়নি। তাই পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ হওয়ার পরিবর্তে দিন দিন বেড়েই চলেছে।
Comments
Post a Comment