অগ্ন্যুদগম ও সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ HS GEOGRAPHY CLASS Xi (1St Semester)
HS GEOGRAPHY CLASS Xi (1St Semester)
অগ্ন্যুদগম ও সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ written by Firoz Mallick
1. ভূ-অভ্যন্তরের গলিত পদার্থ ভুপৃষ্ঠের ফাটল দিয়ে ভূপৃষ্ঠের বাইরে বেরিয়ে আসলে তাকে :- অগ্নুৎপাত বলে।
2. সাধারনত অগ্নুৎপাত হলো এক ধরনের: অন্তর্জাত শক্তি ও আকস্মিক ভূ-আলোড়ন এর উদাহরণ।
3. ভূআলোড়ন, পাত সঞ্চালন, ভূ-অভ্যন্তরের গ্যাসীয় পদার্থের তারতম্যের কারণে অগ্নুৎপাত সৃষ্টি হয়।
4. ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের যে স্থান দিয়ে বেরিয়ে আসে তাকে বলে আগ্নেয়গিরি, এটি অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ।
5. ভূ-অভ্যন্তরে শিলা যে গলিত তরল অবস্থায় থাকে তাকে ম্যাগমা বলে। ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের বাইরে এলে লাভা বলে।
6.অগ্নুৎপাত জাত বিভিন্ন পদার্থ গুলি তিন প্রকার (A) গ্যাসীয় পদার্থ (B) তরল পদার্থ এবং (C) কঠিন পদার্থ।
7. আগ্নেয়গিরি থেকে বের হওয়া গ্যাসের মধ্যে প্রায় 60-90% জলীয়বাষ্প। জলীয়বাষ্পের পরিমাণ সর্বাধিক।
8.অগ্ন্যুৎপাতের ফলে জলীয়বাষ্প (উৎস- ভৌমজল ও ম্যাগমার বাষ্প) বেশি বের হয় বলে বৃষ্টি হয়।
9. বিভিন্ন গ্যাস গুলির মধ্যে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড (Co2) গ্যাস বেশি বের হয়।
10. লাভা হল আগ্নেয়গিরি থেকে বের হওয়া তরল পদার্থ, ভূ-অভ্যন্তরে ম্যাগমার ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহকে প্লিউম বলা হয়।
11.যেসব আগ্নেয়গিরি থেকে ধোঁয়া ও জলীয়বাষ্প বের হয় তাদেরকে:- ফিউমারোল বলে।
12. যেসব আগ্নেয়গিরি থেকে প্রধানত কার্বন ডাই-অক্সাইড বের হয় তাদেরকে :-মফিটিস বলে।
13. যেসব আগ্নেয়গিরি থেকে বেশি বোরিক অ্যাসিড বের হয় তাদেরকে স্যাফিওনি বলে।
14. যেসব আগ্নেয়গিরি থেকে গন্ধক মিশ্রিত গ্যাস বের হয় তাদেরকে সালফাটরা বলে।
15. আলাস্কার কাটমাই আগ্নেয়গিরি অঞ্চলে অসংখ্য ফিউমারোল দেখা যায়, একে Valley of ten thousand smoke বলে।
16. আম্লিক লাভাতে :- সিলিকার পরিমাণ বেশি থাকে। অত্যান্ত গাঢ় ও আঠালো হয়। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বের হয়।
17. ক্ষারকীয় লাভাতে:- সিলিকার পরিমাণ কম থাকে। তরল, হালকা ও কালো হয়। দ্রুত গতিতে প্রবাহিত হয়।
18. গ্রানাইট শিলা :- আম্লিক লাভার উদাহরণ। ব্যাসল্ট শিলা ক্ষারীয় লাভার উদাহরণ।
19. অগ্নুপাতের ফলে নিচের তরল স্তরটি উপরের কঠিন লাভাকে বহুদুর টেনে নিয়ে গেলে একে পা-হো-হো বলে।
20. অগ্নুপতের ফলে লাভার উপরিভাগ মসৃণ হলে পা হো হো, এবড়োখেবড়ো হলে তাকে আ-আ বলে।
21. আগ্নেয় ভস্ম আগ্নেয়গিরির চারপাশে সিমেন্টের মত জমাট বাঁধে তাকে : আগ্নেয় তুফ বলে।
22. জ্বলন্ত ভস্ম ও পাইরোক্লাস্ট ঢালাই লোহার মত কঠিন হলে তাকে :- ইগনিমব্রাইট বলে।
23. অগ্ন্যুৎপাতের সময় প্রচুর পরিমাণে গ্যাস, জ্বলন্ত ভস্ম ও মোটা দানার শিলাচূর্ণ থাকে, একে নুয়ে আরদেন্তি বলে।
24. জ্বালামুখে জমে থাকা কঠিন লাভা অগ্ন্যুৎপাতের সময় ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে বেরিয়ে এলে তাকে পাইরোক্লাস্ট বলে।
25. পাইরোক্লাস্ট এর মধ্যে খুব সূক্ষ্ম দানার মতো উজ্জ্বল পদার্থকে স্কোরিয়া বলে।
26. 5-64mm ব্যাসার্ধ যুক্ত ছোট ছোট পাইরোক্লাস্ট কে ল্যাপিলি বলে।
27. পাইরোক্লাস্ট পদার্থ সিন্ডার ও ভস্ম জমা হয় শঙ্কুর আকারে আগ্নেয়গিরি সৃষ্টি করলে, পাইরোক্লাস্ট শঙ্কু বলে।
28. ভূ-অভ্যন্তরে যে সব জায়গার উষ্ণতা চারপাশের তুলনায় অনেক বেশি, সেই উত্তপ্ত অঞ্চল গুলিকে তপ্ত বিন্দু বলে।
29. অভিসারী পাত সীমান্তে নিঃসারী অগ্নুৎপাত দেখা যায়। যেমন- মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা অঞ্চলে গঠিত অগ্নুৎপাত।
30. প্রতিসারী ও নিরপেক্ষ পাত সীমানায় বিদার অগ্নুৎপাত দেখা যায়। যেমন- সান আন্দ্রিজ চ্যুতি অঞ্চলে অগ্নুৎপাত।
31. ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমি বা ডেকানট্রাপ অঞ্চল বিদার অগ্ন্যুৎপাতের ফলে গঠিত হয়েছে।
32. ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরি টি ইন্দোনেশিয়াতে। এটি অগ্নুৎপাতের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর বিস্ফোরক আগ্নেয়গিরি।
33. লাভা যখন শিলার ফাটল দিয়ে নিঃসারে বেরিয়ে এসে অগ্নুৎপাত ঘটায় তাকে নিঃসারী অগ্নুৎপাত বলে।
34 ভূ অভ্যন্তরে অগ্নুৎপাত হয়ে ম্যাগমা ভূ অভ্যন্তরে জমাটবদ্ধ হলে তাকে উদবেধী অগ্নুৎগম বলে।
35. নিঃসারী অগ্নুৎপাত ব্যাসল্ট জাতীয় শিলায়। উদবেধী অগ্নুৎপাত গ্রানাইট জাতীয় শিলা লক্ষ করা যায়।
36. বিদার অগ্ন্যুদগম এ ভূত্বকের অনেক এলাকা জুড়ে লাভা নিঃশব্দে বেরিয়ে বিদার অগ্নুৎপাত হয়।
37. বিদার অগ্নুৎপাতে:- বিস্ফোরণ তেমন ঘটেনা,লাভা তরল ও বিস্তৃত হয়।
38. ম্যাগমা যখন এক বা একাধিক জ্বালামুখ দিয়ে বিস্ফোরণের সাথে বাইরে এলে:- কেন্দ্রীয় অগ্নুৎপাত বলে।
39. উপকূল অঞ্চলে অগ্নুৎপাতের লাভা প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রের তলায় বালিশের মত সঞ্চিত হলে :-পিলো লাভা বলে।
40. ভূমধ্যসাগরের লিপারি দ্বীপে অবস্থিত স্ট্রম্বলি কে ভূমধ্যসাগরের আলোকস্তম্ভ বলে।
41. ন্যুয়ে আর্দেন্তি দেখা যায়:- পিলি শ্রেণির আগ্নেয়গিরিতে। ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরি:- ইন্দোনেশিয়াতে অবস্থিত।
42. এটনা ভিসুভিয়াস (জীবন্ত আগ্নেয়গিরি) অগ্নুৎপাতে বের হওয়া গ্যাস:- ফুলকপির মতো আকৃতি ধারণ করে।
43. হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে তরল লাভা সরু সুতোর মতো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে এই ধরনের:- লাভাকে পিলির কেশ বলে।
43. অগ্ন্যুৎপাতে সৃষ্ট টেবিল আকৃতির লাভা মালভূমিকে মেসা বলে। মেসা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ছোট হলে তাকে বিউট বলে।
45. আগ্নেয়গিরির যে খোলা মুখ দিয়ে আগ্নেয়জাত পদার্থ বাইরে বেরিয়ে আসে তাকে জ্বালামুখ বলে।
46. আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখে জমে থাকা বৃষ্টির জল হল মেটিওরিক জল।
47. ক্ষুদ্র অগভীর জ্বালামুখ যুক্ত হ্রদকে : মায়ার বলে।
48. বৃহৎ আকৃতির অগভীর জ্বালামুখ গুলিকে ক্যালডেরা বলা হয়। যেমন :-ইন্দোনেশিয়ার ক্রাকাতোয়া ক্যালডেরা।
49. ক্যালডেরাতে জল জমে ক্যালডেরা হ্রদ গঠিত হয়। ইন্দোনেশিয়া টোৰা পৃথিবীর বৃহত্তম ক্যালডেরা হ্রদ।
50. অগ্ন্যুৎপাতের সময় ম্যাগমা যে নলপথের মধ্য দিয়ে ভূপৃষ্ঠের বাইরে বেরিয়ে আসে তাকে আগ্নেয় গ্রীবা বলে।
51. অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ক্ষারীয় লাভা ভূপৃষ্ঠের বেরিয়ে এসে:- শিল্ড আগ্নেয়গিরি গঠন করে। যা দেখতে শঙ্কু আকৃতিবিশিষ্ট ।
52. আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের মধ্যে আম্লিক লাভার কঠিন স্তম্ভকে প্লাগডোম বলে। মাউন্ট পিলি আগ্নেয়গিরিতে এটি দেখা যায়।
53. ছাতার মতো আকৃতিবিশিষ্ট প্লাগডোমকে খ্যালয়েড বলে। গ্রিক শব্দ Tholes থেকে এসেছে, অর্থ গম্বুজ।
54. ম্যাগমা জমাটবেঁধে গঠিত খাড়া পার্শ্বঢাল বিশিষ্ট শঙ্কু আকৃতির ভূমিরূপকে হর্নিটো বলে। কেন্দ্রীয় অগ্নুৎপাতে সৃষ্ট।
55. শিলাস্তরের মধ্যে ম্যাগমা উলম্বভাবে জমাট বাধলে তাকে ডাইক বলে।
56. পশ্চিমবঙ্গের রানীগঞ্জের কয়লা খনি অঞ্চলে ডাইক দেখা যায়।
57. ম্যাগমা শিলাস্তরে সমান্তরাল ভাবে জমাট বাধলে সিল বলে। Great whin sill এটি পৃথিবীর বিখ্যাত সিল।
58. সিন্ডার বৃক্ষের মতো বা লেন্সের আকৃতির আগ্নেয় উদবেদকে ল্যাকোলিখ বলে।
59. যুক্তরাষ্ট্রের হেনরি পর্বত ল্যাকোলিখ এর উদাহরণ। ছোটনাগপুর মালভূমিতে ল্যাকোলিথ দেখা যায়।
60. লেন্সের আকারে ঊর্ধ্বভঙ্গের শীর্ষে ও অধভঙ্গের নিম্ন অংশে সৃষ্টি হওয়া আগ্নেয় উদবেদকে ফ্যাকোলিথ বলে।
61. অবতল আকৃতিবিশিষ্ট উদবেধী আগ্নেয় শিলাকে লোপলিথ বলে।
62. ভূ-অভ্যন্তরে কয়েকশ কিমি বিস্তৃত পাতালিক আগ্নেয়শিলা গঠিত গম্বুজ আগ্নেয় উদভেদকে ব্যাথোলিথ বলে।
63. উদবেদী ভূমিরূপের মধ্যে ব্যাথোলিথ হল সবচেয়ে বড়। গ্রানাইট শিলাতে ব্যাথোলিথ হয়।
64. ছোট আকারের ব্যাথোলিথকে স্টক বলে। ছোট আকারের গোলাকৃতি ব্যাথোলিথকে বস বলে।
65. চ্যাপ্টা বা বিষম আকৃতির ব্যাথোলিথকে কনোলিথ বলে। আফ্রিকার কারো অঞ্চলে এরুপ ভূমিরূপ দেখা যায়।
66. সিল আগ্নেয় উদভেদ এর প্রান্তভাগে জলপ্রপাত গড়ে ওঠে।
67. আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত পদার্থ গুলি- জলীয়বাষ্প ও গ্যাস,লাভা ও জল। পাইরোপ্লাস্ট, ধূলা, ছাই, ভস্ম প্রভৃতি।
68. আগ্নেয়গিরি হলো :- শঙ্কু আকৃতির সঞ্চয়জাত আগ্নেয় পর্বত। বিস্ফোরণ হলে আগ্নেয়গিরি বিলুপ্ত হতে পারে।
69. অগ্ন্যুৎপাতের ফলে বেরিয়ে আসা জলকে জুভেনাইল জল বলে।
70. জ্বালামুখ যে বিশাল নলের মাধ্যমে ভূ-অভ্যন্তরের ম্যাগমা গহ্বরের এর সাথে যুক্ত থাকে তাকে আগ্নেয় নল বলে।
71. আগ্নেয় নলের নিচে ভূ-অভ্যন্তরে যেখানে ম্যাগমা উৎপন্ন হয়ে জমা থাকে তাকে ম্যাগমা প্রকোষ্ঠ বলে।
72. লাভা জাত বিভিন্ন পদার্থ অগ্নুৎপাতের ফলে সঞ্চিত হয়ে শঙ্কু আকৃতির পর্বত সৃষ্টি করলে তাকে আগ্নেয় শঙ্কু বলে।
73.আগ্নেয়গিরিতে প্রবল বিস্ফোরণ হলে উত্তপ্ত ও গলিত পদার্থ উপরে উঠে গিয়ে গোলাকার খন্ডে পরিণত হলে তাকে আগ্নেয় বোমা বলে।
74. শিল্ড আগ্নেয়গিরি ঢাল প্রায় :- 10 ডিগ্রির কম হয়।
75. আগ্নেয়গিরির গা-বেয়ে কাদার প্রবাহরূপে নিচে নেমে এলে তাকে লহর বলে।
76. পৃথিবীর উচ্চতম জীবন্ত আগ্নেয়গিরি:- ওজোস ডেল সালাডো। একটি জীবন্ত বা সক্রিয় আগ্নেয়গিরি।
77. ভারতের একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরি হল:- আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ অবস্থিত ব্যারেন (অনেকের মতে সুপ্ত)।
78. জাপানের ফুজিয়ামা একটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরির উদাহরণ।
79. ভারতের একটি মৃত আগ্নেয়গিরি নারকোন্ডাম। মায়ানমারের পপো একটি মৃত আগ্নেয়গিরির উদাহরণ।
80. পৃথিবীর বেশিরভাগ আগ্নেয়গিরি:- বিমিশ্র শঙ্কু আকৃতির।
81. পৃথিবীর উচ্চতম আগ্নেয়গিরির নাম হল হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মৌনালোয়া।
82. হাওয়ায় দ্বীপ হলো পৃথিবীর বৃহত্তম আগ্নেয় দ্বীপ।
83. পৃথিবীর সবচেয়ে বিধ্বংসী আগ্নেয়গিরি হল মাউন্ট পিলি।
84. হাওয়াই দ্বীপের মৌনালোয়া পৃথিবীর বৃহত্তম শিল্ড আগ্নেয়গিরি।
85. মাউন্ট ফুজি:- জাপানের শ্রেষ্ঠ আগ্নেয়গিরি।
86. অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট পাইরোক্লাস্ট ছিদ্রপথ এর বাইরে বেরিয়ে এসে ক্রমশ সঞ্চিত হয়ে যে শঙ্কু আকৃতির আগ্নেয়গিরি গঠন করলে তখন তাকে বিমিশ্র শঙ্কু আকৃতির আগ্নেয়গিরি বলে।
87. অভিসারী পাত সীমানায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা অঞ্চলে:- 80% আগ্নেয়গিরি আছে।
Comments
Post a Comment