জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ HS Geography
জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ
Written by FIROZ MALLICK
1)চিরহরিৎ বৃক্ষ- অধিক বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে চিরসবুজ বৃক্ষ জন্মায়। যেমন- নিরক্ষীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেশি হয় বলে চিরসবুজ উদ্ভিদ রোজউড, আয়রনউড, মেহগনি দেখা যায়।
2.পর্ণমোচী উদ্ভিদ- মাঝারি বৃষ্টি যুক্ত ক্রান্তীয়, উপক্রান্তীয় অঞ্চলে পাতাঝরা উদ্ভিদ জন্মায়। যেমন- আম, জাম, পলাশ, কাঁঠাল।
3.জেরোফাইট- খুব কম বৃষ্টিপাত যুক্ত মরুভূমি অঞ্চলে কাঁটাযুক্ত জেরোফাইট উদ্ভিদ জন্মায়।
4.রাজস্থান মরুভূমিতে জেরোফাইট উদ্ভিদ দেখা যায়।
5.হাইড্রোফাইট - অধিক বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে হাইড্রোফাইট উদ্ভিদ জন্মায়।
6.মেসোফাইট- মাঝারি বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে মেসোফাইট উদ্ভিদ জন্মায়।
7.জেরোফাইট- খুব কম বৃষ্টিপাত যুক্ত, শুষ্ক মরু অঞ্চলে জেরোফাইট বা জাঙ্গল উদ্ভিদ জন্মায়।
8.ট্রপোফাইট - আর্দ্র ও শুষ্ক পরিবেশে ট্রপোফাইট উদ্ভিদ জন্মায়।
9.হ্যালোফাইট-সমুদ্র উপকূলের জলাভূমির লবণাক্ত মাটিতে হ্যালোফাইট বা লবণাম্বু উদ্ভিদ জন্মায়। (ম্যানগ্রোভে হল হ্যালোফাইট উদ্ভিদ)
10.মেগাথার্মস [উচ্চ তাপযুক্ত উদ্ভিদ]- যেসব উদ্ভিদের সারা বছর বেশি উষ্ণতার প্রয়োজন হয়, তাদের মেগাথার্মস
বলে।
বৈশিষ্ঠ:-১)গড় উষ্ণতা 25 - 27 ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২)উদ্ভিদ গুলি অধিক উচ্চতা বিশিষ্ট হয়।
৩)চিরসবুজ উদ্ভিদ জন্মায়।
যেমন- নিরক্ষীয় অঞ্চলের মেহগনি।
(12) মেসোেথার্মাস- যেসব উদ্ভিদের সারাবছর মাঝারি উষ্ণতার প্রয়োজন হয় তাদের মেসোেথার্মস বলে।
বৈশিষ্ঠ:- ১)গড় উষ্ণতা 18 - 24 ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২)মাঝারি উচ্চতা বিশিষ্ট উদ্ভিদ।
৩)শুষ্ক ঋতুতে পাতা ঝরে যায়।
যেমন- ক্রান্তীয় অঞ্চলের শাল, সেগুন, প্রভৃতি।
13) মাইক্রোথার্মাস- যেসব উদ্ভিদের সারাবছর কম উষ্ণতার প্রয়োজন হয় তাদের মাইক্রোথার্মাস বলে।
বৈশিষ্ঠ :- ১)গড় উষ্ণতা 12 - 17 ডিগ্রী সেলসিয়াস।
২)উদ্ভিদের শাখা প্রশাখা কম থাকে।
৩(কম উষ্ণতা যুক্ত অঞ্চলে দেখা যায়।
যেমন- সরলবর্গীয় অরণ্যের পাইন, ফার প্রভৃতি।
(14) হেকিস্টোথার্মাস- যে সমস্ত উদ্ভিদ খুব শীতল বা ঠান্ডা পরিবেশে জন্মায় তাকে হেকিস্টোথার্মাস বলে।
বৈশিষ্ঠ :- ১)গড় উষ্ণতা 0-10 ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২)শীতল জলবায়ুতে দেখা যায়।
যেমন- লাইকেন, মস।
*তুন্দ্রা জলবায়ুতে হেকিসটোথার্মস উদ্ভিদ জন্মায়।
15). অক্সিলোফাইট (Oxylophytes)- আম্লিক মাটিতে জন্মানো উদ্ভিদকে অক্সিলোফাইট উদ্ভিদ বলে। *
16. লিখোফাইট (Lithophytes)- পাথর বা শিলা যুক্ত মাটিতে জন্মানো উদ্ভিদকে লিথোফাইট বলে।
17.সাইক্রোফাইট (Psychrophiles)- শীতল মাটিতে জন্মানো উদ্ভিদকে সাইক্রোফাইট বলে। *
18.স্যামোফাইট (Psammophytes)- বালি ও কাঁকর যুক্ত মাটিতে জন্মানো উদ্ভিদকে স্যামোফাইট বলে।
19) আলোক প্রেমী (Photophilic) উদ্ভিদ- যেসব উদ্ভিদ পূর্ণ সূর্যের আলোতে ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারে তাদের আলোক প্রেমী উদ্ভিদ বা হেলিওফাইট বলে। যেমন- সূর্যমুখী, নয়নতারা। এরা ছায়া সহ্য করেনা।
20) আলোক বিদ্বেশী (Sciophyte) উদ্ভিদ- যেসব উদ্ভিদ কম আলোতে ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারে, তাদের আলোক বিদ্বেষী বা ছায়াপ্রেমী বা স্কিওফাইট উদ্ভিদ বলে। যেমন-অর্কিড, ফার্ন এরা সূর্যের আলো সহ্য করতে পারে না।
21) ফ্যাকাল্টেটিভ স্কিওফাইট- যেসব আলোক প্রেমী উদ্ভিদরা ছায়াতে বিকাশ লাভ করে, তাদের ফাকাল্টেটিভ স্কিওফাইট বলে।
22) ফ্যাকাল্টেটিভ হেলিওফাইট- যেসব আলোেক বিদ্বেশী উদ্ভিদ প্রবল সূর্যের আলোতে বেঁচে থাকে, তাদের ফাকাল্টেটিভ হেলিওফাইট বলে।
24.লাল রঙের দীর্ঘ তরঙ্গের আলো:- উদ্ভিদ বৃদ্ধির সহায়ক।
25.নিমজ্জিত জলজ উদ্ভিদ- যেসব জলজ উদ্ভিদ পুরোটাই জলের নিচে ডুবে থাকে। এর দুটি ভাগ হল-
26.নিমজ্জিত ভাসমান জলজ উদ্ভিদ- যেসব জলজ উদ্ভিদ শিকড় ছাড়া জলে নিমজ্জিত অবস্থায় ভেসে থাকে। যেমন-ঝাঁঝি, ব্লাডার।
27. নিমজ্জিত মূলী জলজ উদ্ভিদ- যেসব জলজ উদ্ভিদ জলের নিচে অবস্থান করে এবং শিকড় মাটির নিচে কাঁদাতে আবদ্ধ থাকে। যেমন-পাতাশ্যাওলা।
28.ভাসমান জলজ উদ্ভিদ- যেসব জলজ উদ্ভিদ জলে ভেসে থাকে অর্থাৎ পাতাগুলি জলের উপর অবস্থান করে। এর দুটি ভাগ হল-
29. স্বাধীন ভাসমান জলজ উদ্ভিদ- এদের শিকড় জলের তলদেশে মাটির সাথে যুক্ত না থাকায়, জলে স্বাধীনভাবে ভেসে থাকতে পারে। যেমন- কচুরিপানা, পানিফল।
30.ভাসমান মূলী জলজ উদ্ভিদ- এই ধরনের জলজ উদ্ভিদের পাতা জলে ভেসে থাকে, উদ্ভিদের বাকি অংশ জলের নিচে এবং শিকড় মাটির সাথে যুক্ত থাকে। যেমন- শালুক, পদ্ম।
31.উভচর জলজ উদ্ভিদ- যেসব জলজ উদ্ভিদ অল্প জল বিশিষ্ট স্থানে জন্মায় এবং জলভাগ ও স্থলভাগ দুই পরিবেশ জীবনচক্র সম্পন্ন করে। যেমন- লজ্জাবতী, হোগলা প্রভৃতি।
32.মেসোফাইট বা মধ্যবর্তী উদ্ভিদের সংজ্ঞা: মাঝারি আর্দ্রতা ও মাঝারি শুষ্ক যুক্ত অঞ্চলে স্থলভাগে যে সমস্ত উদ্ভিদ জন্মায় তাদেরকে মেসোফাইট বা মধ্যবর্তী উদ্ভিদ বলে।
বৈশিষ্ঠ:-১)মেসোফাইট উদ্ভিদকে সাধারন উদ্ভিদ বলা হয়।
২)পৃথিবীর বেশিরভাগ অঞ্চলে দেখা যায়।
৩)এরা জলজ এবং জাঙ্গল এই দুই উদ্ভিদের মধ্যবর্তী পর্যায়ের উদ্ভিদ।
(বিভিন্ন মেসোফাইট উদ্ভিদের উদাহরন)
1) চিরহরিৎ বৃক্ষ- সারাবছর সবুজ থাকে। যেমন- মেহগনি, আইরন উড।
2) পর্ণমোচী বৃক্ষ-শুষ্ক ঋতুতে পাতা ঝরে যায়। যেমন-শিশু, শাল।
3) ঝোপঝাড় বৃক্ষ-লতাগুল্ম, বিরুৎ জাতীয়। যেমন- খোসারি।
4) সরলবর্গীয় বৃক্ষ- চিরহরিৎ ও শঙ্কু আকৃতি। যেমন-পাইন, ফার।
5) কাষ্ঠল উদ্ভিদ- আম, জাম, কাঁঠাল প্রভৃতি।
33)হ্যালোফাইট উদ্ভিদ: সমুদ্র উপকূল অঞ্চলের লবনাক্ত মাটিতে যেসব উদ্ভিদ জন্মায় তাদের হ্যালোফাইট বা লবণাম্বু উদ্ভিদ বলে।
বৈশিষ্ঠ:-
∎ শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মাটিতে লবণাম্বু বা হ্যালোফাইট উদ্ভিদ জন্মায়। সমুদ্রের উপকূল অঞ্চলে দেখা যায়।
∎ জোয়ারের ফলে উপকূলে জলমগ্ন হয়ে এই মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়।
■ মাটিতে লবণের পরিমাণ বেশি থাকায় লবণাম্বু উদ্ভিদ মাটি থেকে কম জল শোষণ করতে পারে।
যেমন- সুন্দরী, গরান, গেওয়া, কেওড়া লবণাম্বু উদ্ভিদ বা ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ।
34.শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মাটি কি?
Ans)সমুদ্র জলের সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl), ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড (MgCl2) এবং ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgSO4) মিশ্রিত জল দ্বারা সৃষ্ট মাটিতে লবণের পরিমাণ বেশি থাকায় লবণাম্বু উদ্ভিদ মাটি থেকে কম জল শোষণ করতে পারে একে শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মাটি বলে।
35) শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকাতে :- হ্যালোফাইট উদ্ভিদ জন্মায়।
36(জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম- লবণাম্বু উদ্ভিদের ফলগুলি গাছে থাকা অবস্থায় অঙ্কুরোদগম হলে তাকে জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম বলে।
37.জেরোফাইট উদ্ভিদ:- শুষ্ক মরু অঞ্চলে জন্মায়।
38.হাইড্রোফাইট উদ্ভিদ:- জলজ পরিবেশে জন্মায়।
39:-মেসোেফাইট উদ্ভিদ:- সাধারণ স্থলজ পরিবেশে জন্মায়।
40:-হ্যালোফাইট উদ্ভিদ উপকূলীয় লবণাক্ত মাটিতে জন্মায়।
41.হেলিওফাইট উদ্ভিদ অধিক সূর্যের আলোতে জন্মায়।
42.স্কিওফাইট উদ্ভিদ ছায়াযুক্ত অঞ্চলে জন্মায়।
Comments
Post a Comment