হিন্দু মেলা কিভাবে তার জাতীয়তার আদর্শ ও উদ্দেশ্যগুলি জনসমক্ষে তুলে ধরে তাআলোচনা কর অথবা হিন্দু মেলার উদ্দেশ্য গুলি লেখ , ভারতীয় ইতিহাসে হিন্দু মেলার কার্যাবলী আলোচনা কর টিকা লেখ হিন্দু মেলা , মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন madhymik history suggestions HS history suggestions ucchomadhymik history suggestions
Q)হিন্দু মেলা কিভাবে তার জাতীয়তার আদর্শ ও উদ্দেশ্যগুলি জনসমক্ষে তুলে ধরে তা আলোচনা কর:-
অথবা
হিন্দু মেলার উদ্দেশ্য গুলি লেখ এবং ভারতীয় ইতিহাসে হিন্দু মেলার কার্যাবলী আলোচনা কর:
অথবা
টিকা লেখ: হিন্দু মেলা
Answer) রাজনারায়ণ বসুর সঙ্গী নবগোপাল মিত্র ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় "হিন্দু মেলা' প্রতিষ্ঠা করেন। 'হিন্দু মেলা'র প্রথম অধিবেশন বসেছিল ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের চৈত্র সংক্রান্তিতে। তাই গোড়ার দিকে এর নাম ছিল চৈত্র মেলা। প্রথম দিকে হিন্দু মেলার সম্পাদক ছিলেন গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সহকারি সম্পাদক ছিলেন নবগোপাল মিত্র। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মনোমোহন ঘোষ ছিলেন নবগোপাল মিত্রের সহযোগী।
• হিন্দুমেলার প্রধান উদ্দেশ্য গুলি হল : ড. রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে হিন্দু মেলার তিনটি উদ্দেশ্য হল-
1) জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটানো।
2)দেশাত্মবোধ সৃষ্টি করা।
3) হিন্দুদের মধ্যে আত্মনির্ভরতার মনোভাব গড়ে তোলা।
••হিন্দু মেলার কার্যাবলি : ১.যোগেশচন্দ্র বাগলের লেখা থেকে জানা যায়, হিন্দু মেলার উদ্দেশ্য পূরণের জন্য ছ-টি কমিটি গঠিত হয়েছিল।
*প্রথম কমিটি হিন্দুদের মধ্যেকার বিদ্বেষভাব দূর করে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করত।
*দ্বিতীয় কমিটি এক বছরে হিন্দুসমাজে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের বিবরণী তৈরি করত।
*তৃতীয় কমিটি দেশীয় বিদ্যাশিক্ষার উন্নতির জন্য উদ্যোগী ব্যক্তিদের সম্মান জানাত।
*চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ কমিটিগুলি ভারতের নানাস্থানে যেসব দেশীয় শিল্প আছে তার নমুনা এনে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করত।
2.হিন্দু মেলা এদেশের যুব সমাজের মধ্যে শরীরচর্চায় উৎসাহদানের ব্যবস্থা করেছিল।
3.হিন্দু মেলা তার জাতীয়তার আদর্শ জনসমক্ষে প্রচার করার জন্য ন্যাশনাল পেপার নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছিল। এর ছাপাখানার নাম ছিল 'ন্যাশনাল প্রেস'।
4.এই সংগঠন একটি ন্যাশনাল স্কুল ও একটি ন্যাশনাল জিমনেসিয়াম প্রতিষ্ঠা করেছিল।
5.হিন্দু মেলা উপলক্ষ্যে কবিতা ও গান রচিত হত, যেগুলি স্বদেশি ভাবধারায় রচিত। সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘মিলে সব ভারত সন্তান এক তান মন প্রাণ, গাও ভারতের যশগান' এবং গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘লজ্জায় ভারত যশ গাহিব কী করে' ইত্যাদি গানগুলি স্বদেশি ভাবনার প্রসারে সাহায্য করেছিল।
6.হিন্দু মেলা বাংলার প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও শিল্পীদের পুরস্কৃত করত।
7.হিন্দু মেলা যে প্রদর্শনীর আয়োজন করত সেখানে সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণের সুযোগ পেত।
8.এই সংগঠন ভারতের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার বিশ্লেষণ করে বক্তৃতার ব্যবস্থা করত।
ভারতের জাতীয়তাবাদী চেতনার জাগরণে হিন্দু মেলার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। বাঙালির মনে ঐক্য ও স্বনির্ভরতার বীজ বপন করেছিল এই সংগঠন।
Comments
Post a Comment