অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি' সম্বন্ধে আলোচনা করো madhymik history suggestions madhymik itihas suggestions
Q) শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু স্মরণীয় কেন?
অথবা,
'অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি' সম্বন্ধে আলোচনা করো।
Ans)বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের অংশগ্রহণ ও আত্ম ত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। এই সময়কালে অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি স্থাপন করা হয়।
1)অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি গঠনের পটভূমি : বঙ্গভঙ্গ- বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের অংশগ্রহণ বন্ধ করার জন্য বাংলা সরকারের প্রধান সচিব আর ডব্লিউ কার্লাইল ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১০ অক্টোবর একটি নির্দেশনামা জারি করেন। এটি 'কার্লাইল সার্কুলার' নামে পরিচিত। এই সার্কুলার অনুযায়ী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের বৃত্তি বন্ধ করা, বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা, বিদ্যালয়ের অনুমোদন বন্ধ করার কথা বলা হয়। অনেক ছাত্রকে সার্কুলার মোতাবেক বহিষ্কার করা হয়। সরকারের এই সার্কুলারের বিরুদ্ধে সিটি কলেজের ছাত্রনেতা শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ৪ নভেম্বর অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি গঠন করেন।
2) অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটির প্রধান সংগঠক, পৃষ্ঠপোষক ও কার্যালয় : অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটির প্রধান সংগঠক ছিলেন শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু এবং জাপান থেকে প্রত্যাগত প্রযুক্তিবিদ রমাকান্ত রায়। এই সমিতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন জননায়ক কৃষ্ণকুমার মিত্র ও তাঁর সঞ্জীবনী পত্রিকা। এই সমিতির প্রধান কার্যালয় ছিল ৪/১, কলেজ স্কোয়ারে।
3) অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি গঠনের উদ্দেশ্য : এই সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল ছাত্রসমাজকে সরকার-বিরোধী স্বদেশি আন্দোলনে উৎসাহ দান করা, স্বদেশি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার অপরাধে সরকারি আদেশে বিতাড়িত ছাত্রদের বিকল্প শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা, জাতীয়তাবাদের নতুন উদ্যমকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করা এবং স্বদেশি শিক্ষায় আগ্রহ বৃদ্ধি করা ও স্বদেশি পণ্য বিক্রয় করা।
4)সমিতির সদস্যদের কার্যকলাপ :
১)এই সমিতির সদস্যরা বিলাতি বস্ত্র বিক্রেতাদের দোকানের সামনে পিকেটিং করত। তারা দেশি সুতোকলগুলি থেকে কাপড় কিনে নিজেদের বিক্রয় কেন্দ্রের মারফত বা গাঁটরি মাথায় করে বাড়ি বাড়ি ফেরি করে বিক্রি করত। ছাত্ররা এর থেকে এক পয়সাও লাভ করত না। দেশপ্রেমের ডাকেই তারা এ কাজে নেমেছিল।
২) ছাত্র নেতারা সরকার কর্তৃক স্কুল কলেজ থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রদের নিয়ে জাতীয় বিদ্যালয়তন গড়ে তুলেছিল রংপুরে, নোয়াখালীতে, বরিশালে ও খুলনায়।
অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি গঠন করার জন্য ইংরেজ সরকার ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে শচীন্দ্র প্রসাদ বাবুকে গ্রেফতার করে রাওয়ালপিন্ডি জেলে পাঠিয়ে দেয়।
Comments
Post a Comment